বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপি জাতীয় পার্টি এবং জামাত ও বিদ্রোহী সহ মোট ১২ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করলেও ইতোমধ্যে ২জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
তারা হলেন রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কার্যকরী সদস্য ইস্তেখার আলী এবং পৌর বিএনপির সদস্য মোখলেসুর রহমান। নির্বাচন কমিশন থেকে ইস্তেখার আলী মোবাইল ফোন এবং মোখলেসুর রহমান হ্যাঙ্গার প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।শনিবার ইস্তেখার আলী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষনা দিয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী আলহাজ্জ মোস্তাফিজুর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনায় আত্মনিয়োগ করেছেন। এ ছাড়াও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোখলেসুর রহমান নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়ে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে তার বড়ভাই ও নির্বাচনী কর্মীরা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুন নবী পান্না বিশ্বাসের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারানা চালাচ্ছেন।
এখানে মেয়র পদে মোট ১২ জন প্রার্থী থাকলেও বর্তমানে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ১০ জন। তন্মধ্যে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৬জন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে না থাকলেও এককালের জামাত ঘরোনার মোকাররম হোসাইন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। গত নির্বাচনে তিনি ৪ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন।
এদিকে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও বর্তমান মেয়র আলমগীর সরকার, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিউল ইসলাম, সদস্য সাধন বসাক, সদস্য রুকুনুল ইসলাম ডলারকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ সহ সকল পদপদবী থেকে বহিস্কার করা হলেও তারা নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়ে আসছেন। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নওরোজ কাউসার কানন এবং উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালেকও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
প্রত্যহ কর্মী বাহিনী নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বিদ্রোহী এসব প্রার্থী। দল থেকে বহিস্কার করার প্রসঙ্গে তারা বলেন, নৌকার মনোনয়ন পাওয়া আলহাজ্জ মোস্তাফিজুর রহমানকে দল মনোনয়ন দিলেও তিনি পৌরসভার বাসিন্দা নন। তিনি সপরিবারে এখানো গ্রামে বসবাস করেন।
রানীশংকৈল পৌরসভার বর্তমান মেয়র আলমগীর সরকার দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বলেন, বিগত ৫ বছর পৌরসভার মেয়র থাকাকালে আমি পরিবারে যতটা সময় দেইনি, তার চাইতে জনগনকে সময় দিয়েছি। তাদের পাশে ছিলাম।করোনার সময় সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছি। তাই জনগনের দাবির মুখে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি যদি প্রার্থী না হতাম তাহলে জনগন আমার বাড়ি ভেঙ্গে দিতো। তাই জনগনের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছি।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নওরোজ কাউসার কানন বলেন নৌকার বিরুদ্দে আমার অভিযোগ নেই। তবে প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি এই পৌরসভার বাসিন্দা নন।। তিনি বাচোর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার হোল্ডিং নাম্বার বাচোরো রয়েছে। নৌকা আমাদের মার্কা। নৌকা চলে গেছে অন্য জায়গায়। দুঃসময়ে যারা আমরা আওয়ামীলীগের হাল ধরেছিলাম তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন হয়নি। তাছাড়াও যাকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি রানীশংকৈল পৌরসভার বাসিন্দা নন। পৌর এলাকার বাইরের বাসিন্দা হয়ে কিভাবে নৌকার মনোনয়ন পেল মানুষের এসব প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে আমি প্রার্থী হয়েছি।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামীলীগ মনোনীত মোস্তাফিজুর রহমান (নৌকা) , উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও বর্তমান মেয়র আলমগীর সরকার(ক্যারাম বোর্ড) উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য ইস্তেখার আলম (মোবাইল ফোন), সদস্য রুকুনুল ইসলাম ডলার (রেল ইঞ্জিন), পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিউল ইসলাম (কম্পিউটার), পৌর আ’লীগের সদস্য ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাধন বসাক (নারিকেল গাছ), উপজেলা স্বেচ্ছাাসেবকলীগের সভাপতি নওরোজ কাউসার কানন (চামচ), উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালেক (জগ)। বিএনপি মনোনীত মাহমুদুন নবী পান্না বিশ্বাস (ধানের শীষ) ,জাতীয় পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন আলমগীর হোসেন (লাঙ্গল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন গত নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি এককালের জামাত সমর্থিত মোকাররম হোসাইন ( ইস্ত্রি)।
আগামী ১৪ ফ্রেবুয়ারী ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ১৪ হাজার ৭০২ জন। পুরুষ ৭ হাজার ৩৯০ এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৩১২ জন ।